ত্বক প্রোটেক্টেড রাখতে সানস্ক্রিন কতটা ইম্পরটেন্ট তা আমরা কম-বেশি সকলেই জানি। সূর্যের অতিবেগুনি (UV) রশ্মি ত্বকের অকাল বার্ধক্য, রোদে পোড়া ভাব, এমনকি ত্বকের ক্যান্সারের কারণ হতে পারে। আর এই সবকিছু থেকে নিজেকে রক্ষা করার সবচেয়ে সহজ এবং কার্যকর উপায় হলো সানস্ক্রিন ব্যবহার করা।
কিন্তু এই সানস্ক্রিন নিয়ে কিছু মিথ সমাজে প্রচলিত আছে। এই মিথগুলো ক্লিয়ার করবো আজকের ব্লগে।
১। রোদ না থাকলে সানস্ক্রিনের প্রয়োজন নেই
সানস্ক্রিন নিয়ে প্রচলিত একটি মিথ হলো শুধুমাত্র রোদ ঝলমলে দিনেই সানস্ক্রিন প্রয়োজন। কিন্তু মেঘলা বা বৃষ্টির দিনেও ইউভি রশ্মি একইভাবে আমাদের ত্বকের ক্ষতি করতে পারে। তাই ওয়েদার যেমনই হোক, সানস্ক্রিন অ্যাপ্লাই করা জরুরী।
২। কালো বা শ্যাম বর্ণের মানুষের সানস্ক্রিনের প্রয়োজন নেই
অনেকেই মনে করেন কালো বা শ্যাম বর্ণের মানুষের সানস্ক্রিন ব্যবহারের প্রয়োজন নেই। এটিও সম্পূর্ণ ভুল ধারণা। এধরনের স্কিন টোনের মানুষের ত্বকে মেলানিন প্রোডাকশন বেশি থাকে, যা তাদের প্রাকৃতিকভাবে সুর্যের ক্ষতিকর রশ্মি থেকে বাঁচাতে কিছুটা হেল্প করলেও পুরোপুরি সুরক্ষা দিতে পারেনা। আপনি যে স্কিন টোনের অধিকারী হন না কেন, সানস্ক্রিনের কোন বিকল্প নেই।
৩। একবার সানস্ক্রিন অ্যাপ্লাই করলেই ত্বক সুরক্ষিত থাকে
একবার সানস্ক্রিন অ্যাপ্লাই করলে তা সারাদিনের জন্য যথেষ্ট, সানস্ক্রিন নিয়ে ম্যাক্সিমাম মানুষের ভুল ধারণা এটি। প্রতি ২ ঘণ্টা পর পর সানস্ক্রিন রি-অ্যাপ্লাই করতে হবে। কারণ সাধারণত এর থেকে বেশি সময় পর্যন্ত সানস্ক্রিনের কার্যকারিতা থাকেনা।
৪। সানস্ক্রিন অ্যাপ্লাই করলেই হয়, নির্দিষ্ট কোন পরিমাপ নেই
এই মিথটির কারণে সানস্ক্রিন অ্যাপ্লাই করেও এর বেনিফিটস পাওয়া যায় না। কিন্তু সানস্ক্রিন মুলত ময়েশ্চারাইজার বা অন্যন্য ক্রিমের তুলনায় বেশি পরিমাণে (দুই আঙ্গুলের পুরোটা জুড়ে নিন) এবং থিক লেয়ারে স্কিনে অ্যাপ্লাই করতে হয়।
৫। ঘরের ভিতরে থাকলে সানস্ক্রিনের প্রয়োজন নেই
আবার আমরা মনে করি, ঘরের ভিতরে থাকলে সানস্ক্রিনের প্রয়োজন নেই। কিন্তু সুর্যের ক্ষতিকর রশ্মি জানালা ভেদ করেও ত্বকের ক্ষতি করতে পারে। বাসায় জানালার পাশে, রান্নাঘরে বা গাড়িতে দীর্ঘ সময় ব্যয় করলে আমাদের ত্বক ইউভি বিকিরনের সংস্পর্শে আসে। তাই ঘরে-বাইরে দিনে বেলায় সব জায়গায় সানস্ক্রিন ব্যবহার করুন।
৬। সানস্ক্রিনের কারণে ক্যান্সার হয়
রেগুলার সানস্ক্রিনের ব্যবহার স্কিন ক্যান্সারের কারণ হতে পারে- এই মিথটির কোন সাইনটিফিক ব্যাখ্যা নেই। বরং সানস্ক্রিন ব্যবহার না করলে সুর্যের ক্ষতিকর রশ্মি ত্বকের নানান সমস্যা যেমন সানবার্ন, হাইপারপিগমেন্টেশন ও মেলাসমার কারণ হতে পারে।
৭। সানস্ক্রিন ভিটামিন ডি উৎপাদনে বাধা দেয়
অনেকের ধারণা সানস্ক্রিন ইউভি রশ্মি ব্লক করে ভিটামিন ডি উৎপাদনে বাঁধা দেয়। কিন্তু বিভিন্ন গবেষনায় দেখা যায়, রেগুলার সানস্ক্রিনের ব্যবহার সাধারণত ভিটামিন ডি এর ঘাটতি সৃষ্টি করে না। নিজেদের স্কিন হেলথ এর সাথে কম্প্রোমাইজ না করেই, আমরা স্বাভাবিকভাবেই আমাদের খাদ্যতালিকার মাধ্যমে এবং অল্প পরিমাণে সূর্যের আলোতে ভিটামিন ডি পেতে পারি।
৮। মেকআপে SPF থাকলে আলাদাভাবে সানস্ক্রিনের প্রয়োজন নেই
SPF যুক্ত মেকআপ কিছুটা সুরক্ষা প্রদান করলেও ত্বককে পুরোপুরিভাবে সুরক্ষিত রাখতে অবশ্যই একটি ভালো মানের সানস্ক্রিন ব্যবহার করতে হবে।
৯। সানস্ক্রিনের কারণে ব্রণ হয়
সানস্ক্রিনের কারণে ব্রণ হয়, এই ধারনাটি সম্পূর্ণ ভুল। তবে স্কিন টাইপ বুঝে সানস্ক্রিন চুজ করতে হয়। সানস্ক্রিনের কিছু ধরণ আছে। একনি-প্রন বা অয়েলি স্কিনের জন্য নন-কমোডোজেনিক সানস্ক্রিন ব্যবহার করা উচিত। এ ধরনের সানস্ক্রিন বিশেষভাবে তৈরী করা হয়, যেন পোরগুলো বন্ধ না করে দেয়।
১০। যেকোন একটি সানস্ক্রিন ব্যবহার করলেই হলো
সানস্ক্রিন বাছাই করার ক্ষেত্রেও অনেকের ধারণা, যেকোন একটি সানস্ক্রিন ব্যবহার করলেই ত্বক সুরক্ষিত থাকে। কিন্তু ত্বক পুরোপুরি সুরক্ষিত রাখতে সানস্ক্রিন অবশ্যই SPF 30 এর বেশি এবং broad spectrum মানের হতে হবে। যেন তা UVA and UVB উভয় রশ্মি থেকে প্রটেক্ট করতে পারে।
যেমন Lavino Sunscreen broad spectrum SPF 50 PA+++. এই সানস্ক্রিন টি SPF 50 এবং broad spectrum হওয়ায় আমাদের ত্বককে দেয় সর্বোচ্চ সুরক্ষা।
আশা করছি সানস্ক্রিন সম্পর্কে এই ভুল ধারণাগুলো ক্লিয়ার করতে পেরেছি। সানস্ক্রিন ব্যবহারে সামান্য অবহেলাও আমাদের ত্বকের জন্য দীর্ঘমেয়াদী ক্ষতির কারণ হতে পারে। তাই সানস্ক্রিন ব্যবহারের নিয়মগুলো সঠিকভাবে মেনে চলুন।
ল্যাভিনো সানস্ক্রিনসহ স্কিন কেয়ারের অথেনটিক সব প্রোডাক্ট পেতে ভিজিট করুন mylavino.com এ। অথবা অর্ডার করুন ফেসবুক পেজ Lavino থেকে।
লিখেছেন আফরোজ জান্নাত হৃদিতা