গরমে বাইরে বেরোনোর আগে সানস্ক্রিন ব্যবহার নিয়ে আমরা যতটা সচেতন থাকি, শীতকালে এই বিষয়টি নিয়ে ততটাই অসচেতনতা কাজ করে। অথচ আমাদের ত্বকের যত্নে গরমের মতো শীতেও সানস্ক্রিন অ্যাপ্লাই করা সমানভাবে জরুরি। কারণ ওজোন স্তর ভেদ করে সুর্যের যে অতিবেগুনী রশ্মি পৃথিবীতে আসে, তা শুধু গরমকালে নয়, শীতকালসহ সকল সিজনে একইভাবে আসে এবং ত্বকের উপর ক্ষতিকর প্রভাব ফেলে।
শীতকালে সাধারণত রোদের তেমন তীব্রতা না থাকায় সানস্ক্রিন ব্যবহারে অবহেলা করা হয়। কিন্তু এই অবহেলা আমাদের স্কিনের জন্য কতটা বিপদজনক হতে পারে, তা নিয়েই আমাদের আজকের ব্লগ।
- বায়ুমণ্ডলে ওজোন গ্যাসের যে স্তর থাকে, সে স্তরই ক্ষতিকর অতিবেগুনী রশ্মি শোষণ করে নেয়। আর শীতকালে বায়ুর ওজোন স্তরের ঘনত্ব কমে যায়, ফলে অতিবেগুনী রশ্মির প্রভাব অনেক বেশি বেড়ে যায়। এর প্রভাব থেকে আমাদের স্কিন সুরক্ষিত রাখতে সানস্ক্রিনের বিকল্প নেই।
- অতিবেগুনী রশ্মির ভয়াবহতা সম্পর্কে হয়তো আমরা অনেকেই জানিনা। এই রশ্মি অনেক ধরণের ক্যান্সারের কারণ হতে পারে। বিশেষ করে স্কিন ক্যান্সার। অতিবেগুনী রশ্মির প্রভাব ত্বকের কোষগুলোর ক্ষতি করার পাশাপাশি কোষে যে ডিএনএ বা জিনগত উপাদান থাকে তা ক্ষতিগ্রস্থ করে। এর ফলে দেখা দিতে পারে স্কিন ক্যান্সার। সানস্ক্রিন ব্যবহারে এই ধরণের ক্ষতির আশংকা অনেকটা কমে যায়।
- শীতকালে বাতাসে জলীয় বাষ্পের পরিমাণ অনেক কমে যাওয়ায় ওয়েদার ড্রাই থাকে। ফলে আমাদের স্কিনও ড্রাই হয়ে যায়। আর ড্রাই স্কিনে এজিং সাইনগুলো খুব তাড়াতাড়ি ভিজিবল হয়। জেল বেইজড ও একোয়া বেইজড সানস্ক্রিনগুলোতে প্রচুর পরিমাণে ময়েশ্চারাইজিং প্রপার্টিজ থাকে। এধরণের সানস্ক্রিন ব্যবহারে ত্বকের শুষ্কতা যেমন দূর হয় তেমনি সুর্যের ক্ষতিকর রশ্মি থেকেও আমরা নিজেদের ত্বক সুরক্ষিত রাখতে পারি।
- শীতের হালকা রোদ স্কিনের কোন ক্ষতি করবেনা ভেবে শীতে অনেক সময় আমরা দীর্ঘক্ষণ রোদে থাকি। এই দীর্ঘ সময় রোদে থাকার কারণে স্কিনের কোলাজেন প্রোডাকশন কমে যায়। ফলাফল, স্কিন পাতলা হয়ে সময়ের আগেই বলিরেখা ও ফেইসে ভাঁজ পরার মতো সমস্যা দেখা দিতে পারে। এ ধরণের সমস্যা এড়াতে সানস্ক্রিন হতে পারে কার্যকরী একটি প্রোডাক্ট।
তবে সানস্ক্রিন ব্যবহারের ক্ষেত্রে এই বিষয়গুলো অবশ্যই মাথায় রাখতে হবে।
১। সানস্ক্রিন ব্যবহারের আগে প্যাচ টেস্ট করে নিন। অর্থাৎ প্রোডাক্টে কোন অ্যাালার্জি আছে কিনা অথবা তা সুট করছে কিনা, চেক করে নিতে হবে।
২। চোখের নিচে, আশেপাশে হালকা করে সানস্ক্রিন অ্যাপ্লাই করুন। সানস্ক্রিন যেন চোখের ভিতরে না যায় সেদিকে লক্ষ্য রাখতে হবে।
৩। সকাল ১০ টা থেকে দুপুর ৩ টা পর্যন্ত সান এক্সপোজার সবথেকে বেশি থাকে। তাই এই সময় বাইরে বের হলে সানস্ক্রিন কোনভাবেই এভোয়েড করা যাবে না।
৪। সানস্ক্রিন ব্যবহারের ২ থেকে ৪ ঘণ্টা পর স্কিন ভালোমত ক্লিন করে, সানস্ক্রিন রি-অ্যাপ্লাই করতে হবে।
৫। আপনি যে সানস্ক্রিনটি ব্যবহার করছেন তা ব্রড-স্পেকট্রাম কিনা তা দেখে নিন। কারণ ইউভি-এ এবং ইউভি-বি উভয় রশ্মি থেকে ত্বককে সুরক্ষিত রাখতে সানস্ক্রিনটি অবশ্যই ব্রড-স্পেকট্রাম হতে হবে।
শীতের মিষ্টি রোদ গায়ে লাগাতে সবাই ভালোবাসে। কিন্তু এই রোদে যেন আমাদের স্কিন দীর্ঘমেয়াদী ক্ষতির মুখে না পড়ে, সেজন্য নিয়মিত একটি ভালো মানের এবং ব্রড-স্পেকট্রাম সানস্ক্রিন ব্যবহারের অভ্যেস গড়ে তুলুন।
সানস্ক্রিনসহ হেয়ার কেয়ার এবং স্কিন কেয়ারের অথেনটিক সব প্রোডাক্ট পেতে ভিজিট করুন mylavino.com এ। অথবা অর্ডার করুন ফেসবুক পেজ Lavino থেকে।
লিখেছেন আফরোজ জান্নাত হৃদিতা